আসুন অসহায়দের পাশে দাড়ায়- জান্নাতুল ফেরদৌস

গত বছর ঠিক ইফতারের আগের সময় বাসায় ফিরবো, কি ভেবে যেনো সেন্ট্রাল প্লাজার সামনে দাঁড়াই হয়ত কোনো কাজ মাথায় এসেছে।
সেন্ট্রাল প্লাজার নিচে কিন্তু কেন্ডী বিরিয়ানি সেরা।সব্বাই সেখানে বিরিয়ানি খেতে যায়।।
অনেক ভীড় এতটা ভীড় ইফতারের সময় হয়ে থাকে স্বাভাবিক।
এত ভিড়ের মাঝে এক মা আর তার দুই সন্তান কে দেখলাম একটা কোলের বাচ্চা আরেকটা চিল্লাচ্ছে বিরিয়ানি খাবে বলে।
নাহ বাচ্চা রোজা রাখেনি তবে মা রেখেছে তাই বলতে ছিলো আজান দেক, আজান দেক।
মানুষ টার মুখের দিকে তাকালে বুঝা যায় তার হাতে এই বিরিয়ানির প্যাকেট টা উঠবেনা যদি নাহ কেউ দেই।
তবুও মা আশায় দাঁড়িয়ে আছে,কি নিষ্পাপ মা গুলো। সন্তান এর জন্য রোজা রেখে কেমন জানি হাতে পায়ে ধরছে,চেহারাই সব বলে দিচ্ছে।
মায়া লাগছে বড্ড মায়া, মানুষ খুব ব্যাস্ত নজর নেই কারোর হয়ত আছে আমার মত ভাবছে আর মায়া দেখছে।
নাহ আর টিকা গেলোনা আব্বুর কল দেখে বুঝলাম তাড়া দিচ্ছে আমাকে যেতে হবে।
কিন্তু এভাবে কিভাবে যায়?! বাজে অভ্যাস সব কিছুর শেষ না দেখে যেতে পারিনা অভ্যাস নেই।
ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম বাহানা করা যাবে। ব্যাপার নাহ। তাই দাঁড়িয়ে আছি আর তাকিয়ে দেখছি কে কি করে।
আমার শহর খুব ব্যস্ত, সে শহরে এই মার হাতে একটা বিরিয়ানির কোণাও উঠেনি।
ব্যাগে হাত দিয়ে দেখি মাত্র ১৬৫ টাকা আছে। এই টাকাই কি আমার পক্ষে সম্ভব এই ৩ টা মানুষ এর পেট ভর্তি করা??

তাছাড়া এটা আমার গাড়ী ভাড়া। তাই চুপ করে তাকিয়ে ছিলাম। আমিও খুব স্বার্থপর আরে ভাই বাসায় আসতে হবে ত!
বাচ্চা টা অনোবরত কান্না করতেছে।  অসহ্য লাগে বাচ্চাদের কান্না, জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হয় খুব, দোকানের লোক গুলো তাড়িয়ে দিচ্ছে দূরে গিয়ে থেমে আবার আসছে তারা।
দৃশ্য টা ভালো লাগছেনা গা জালা পুড়া করছে। তাই নিজ হাতে একটা বিরিয়ানির প্যাকেট কিনে হাতে দিয়ে বললাম দূরে কোথাও বসে ওদের নিয়ে খান। আমার পক্ষে আর কখনো সম্ভব হলে আমি ৩ প্যাকটই কিনে দিবো।
মাথা টা নিচু করে চলে যাবো তখন ওনি আমার মাথায় হাত বুুলিয়ে টলোমলো চোখে বললো অনেক ভালো থাকিস।

আর কিহ লাগে?!
ভালো থাকাটাই জরুরী এ জগৎ এ।
হেটে হেটে বাসায় হাসার বুদ্ধী খাটালাম।
আব্বুর কল বেজে উঠে জ্বী আব্বু গাড়ি ভাড়া নাই তাই হেটে আসতেছি।
তোর কি মাথায় কিছু নাই? তুই রিজার্ভ এসে যা বাসা থেকে টাকা দিতে পারবি নাহ?!
ওহ হ্যা!
এত কথা বিরক্ত হচ্ছেন তাও বিরক্ত করবো বলবো, আসুন না অন্তত একদিন একটা মানুষ এর পাশে দাঁড়ায়!
খুব ভালো লাগবে চোখ থেকে পানি পরবে কষ্টের নয় সুখের।
সত্যি এই ভালোবাসায় সুখের অভাব নেই।
একটা দিন একজনের ইফতারের দায়ীত্ব নেন অন্তত একটা দিন একজনের সেহরীর দায়ীত্ব নেন!
দেশ টা আমাদের দেশের মানুষ গুলো আমাদের অপেক্ষায় আছে।

ভালো থাকুক মা গুলো, ভালো থাকুক ব্যস্ত শহরের
ব্যস্ত মানুষ গুলো।

Comments

  1. বাহ

    ভাল্লাগ্লো অনেক 😍😍

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

রম্য গল্প : বয়ফ্রেন্ড বিড়ম্বনা। ______________লিখা : Sumaiya Mannan Borna

আকুল আবেদেন ______তানজিনা___আফরিন____বিথী

বর্ষার ভালবাসা------ আশরাফুল হক