অভিমানেই ভালবাসা বাড়ে----- আশরাফুল হক আশরাফ

আজকে নীড়ার জন্মদিন।
ঘড়িতে সময় সকাল ৭:৩০ মিনিট। এখনো মেয়েটা ঘুমোচ্ছে। নীড়া ভুলেই গেছে আজকের দিনের কথা। কিন্তু তার বন্ধুরা কিন্তু ভুলেনি। ওরা ওকে সারপ্রাইজড দেয়ার ব্যবস্থা করছিল।

ওকে উইশ করার জন্য আরো একজন মানুষ আছে, নীড়ার জীবনে খুব স্পেশাল একজন মানুষ।
 আদনান, উনার নাম আদনান। আদনানের সাথে নীড়ার সম্পর্কটা  মার্ক জুকারের ফেইসবুক থেকে হলেও এখন খুব মজবুত।
তাদের সকাল শুরু হয় একজন আরেক জন কে গুড মর্নিং বলে, দিনের সব ব্যস্ততার পর ঘুমানোর আগে গুড নাইট বলে শেষ হয় সারা দিনের ক্লান্তি।
ওরা বেস্ট কাপোল নীড়ার বান্ধবীরা আদনান কে নিয়ে হিংসা করে, অবশ্য হিংসা না নীড়াকে অযথা রাগানোর চেষ্টা করে।

আদনান ১২:০১ মিনিটে নীড়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালো ক্ষুদ্র বার্তার মাধ্যমে।







নীড়া ঘুম থেকে উঠে দেখলো ৮:৩০ বাজতেছে।  ৯ টায় ফ্রেন্ডদের সাথে দেখা করার কথা। আধ ঘ্নটার মধ্যে রেডি হতে হবে।
ঠিক তখনি আদনানের মেসেজ  চোখে পড়লো। সে তখনো আদনানের মেসেজ চেক করল না।
ওয়াশ রুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে।

আধ ঘন্টার মধ্যে রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়লো বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য।
খিল গাও থেকে রিকশা নিলো হাতির জিল যাবে ঐ খানে ওর বন্ধুরা ওর জন্য অপেক্ষা করছে।

রিকশায় উঠে নীড়ার মনে পড়লো আদনান তো আমাকে টেক্সট করেছিল, সাথে সাথে মোবাইল চেক করে দেখলো,


“Many Many Happy Returns Of The Day. Wish  you a Happy life.   HappY Birth DAy."

এই টেক্সট দেখে তার মনে পড়লো আজকে তো এপ্রিলের ২৬ তারিখ। আমার জন্মদিনের কথা নিজেই ভুলে গেলাম ।

আদনান কে সাথে সাথে নীড়া কল দিল, ঘুম ঘুম কন্ঠে ও পাশ থেকে বলে উঠলো নীড়া বল,

নীড়াঃ  তুমি এখনো ঘুমাচ্ছো? ঘড়ইতে দেখেছো কয়টা বাজে?
আদনানঃ কয়টা বাজে?

নীড়াঃ  ৯:৩৬ বাজতেছে। আজকে কি অফিসে যাবে না?
আদনানঃ না মেডাম আজকে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি।

নীড়াঃ কেন ছুটি নিয়েছো? পরে পরে ঘুমানোর জন্য।
আদনানঃ জি না। আজকে আমার মেডামের বার্থডে তো মেডাম কে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জন্য।

নীড়া আর আদনান  কে কিছু বলল না। শুধুই বলল ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে বের হও।
আজকে দুপুরের খাবারটা আমরা একাসাথে খাব।

আদনানও হুম বলে রেখে দিল।

নীড়ার ফ্রেন্ড গুলো হাতে কেক নিয়ে অপেক্ষা করছিল কখন নীড়া আসবে আর কেক কাটবে। নীড়া তার ফ্রেন্ডদের সাথে বার্থডে সেলিব্রেট করলো, আড্ডা দিল। অনেকক্ষণ  পর্যবত একসাথে ছিল সবাই।

তারপর সব ফ্রেন্ডদের কে বিদায় দিইয়ে এখন কেবল আদনানের জন্য অপেক্ষা।

আদনানকে কল দেয়ার পর আদনান নীড়াকে পার্কে বসতে বলল।
নীড়া আদনানকে বলে দিল আজকের দিনটাতে আমাকে অপেক্ষা করাবে না প্লিজ!
আদনান বলল আচ্ছা ঠিক আছে আমি ২৫ মিনিটের মধ্যে আসতেছি।


২৫ মিনিট যাবৎ অপেক্ষা করছে আদনানের জন্য, কিন্তু আদনানের কোন দেখায় মিলছে না। নীড়ার
খুব রাগ হচ্ছিল আদনানের প্রতি।

আদনান আজ বেশী দেরী করলো না। মাত্র ৫ মিনিট লেইট হলো আজকে।


 অভিমানে মুখ  ফিরিয়ে রেখেছে নীড়া ।

আদনান ওর কাছে এসে এক গুচ্ছ রজনীগন্ধা আর একটি লাল গোলাপ দিয়ে আবারো জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালো।

নীড়া আদনানের সাথে এখনো কথা বলছে না, যদিও নীড়া আদনানের সাথে বেশিক্ষন রাগ করে থাকতে পারে না।

আজকেও পারলো না। আদনান যখন বলল পার্কের মধ্যে সবার সামনে  কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে, সাথে সাথে বলে উঠলো আর কান ধরতে হবে না।

প্রচন্ড ক্ষুদা লেগেছে। কিছু খেতে হবে।

আদনান বলল; রেগে গেলেন তো হেড়ে গেলেন। মেডাম আপনি না রাগ করে সাথে  সাথে বলতে পারতেন আপনার ক্ষুদা লেগেছে।

নীড়া চুপ করে রইলো।

আদনান বলল মেডাম আপনি কি জানেন অভিমানে আর বিরহে যে ভালবাসা বাড়ে?

নীড়াঃ জানি বলেই তো তোমার সাথে অভিমান করে থাকি। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারি না কারন তোমার ভালবাসার কাছে আমি ব্যর্থ।


Comments

Popular posts from this blog

রম্য গল্প : বয়ফ্রেন্ড বিড়ম্বনা। ______________লিখা : Sumaiya Mannan Borna

আকুল আবেদেন ______তানজিনা___আফরিন____বিথী

বর্ষার ভালবাসা------ আশরাফুল হক