বর্ষার ভালবাসা------ আশরাফুল হক
--এই যে শুনুন?
---জ্বী আমাকে বলছেন?---প্রতিদিন তো আপনিই ফলো করেন আমাকে,তাহলে নিশ্চয়ই আপনাকেই বলছি।
[আমি একটু অবাক হয়ে আমতা আমতা করতে লাগলাম]
---না মানে ইয়ে,,আসলে,,,
---থাক আর ইয়ে মানে করা লাগবে না।ছাতাটা ধরুন।
---মানে?
---মানে বুঝেন না,বৃষ্টি পড়ছে ছাতাটা ধরুন,দেখছেন না আমি ছাতা নিয়ে আসেনি।
[আমি বুঝতেই পারছি না,মেয়েটা সব কীভাবে বুঝে গেলো]
---এত বড় ছাতা, তাও আবার ফুটো?
---আসলে অনেকদিন ব্যবহার করা হয় নাতো তাই।
---হুমম,,তা বৃষ্টির দিনেও আমাকে ফলো করতে আসতে হলো কেনো?আজকে একটু বিশ্রাম নিতে পারতেন।
---না মানে, তোমাকে মানে আপনাকে একদিন না দেখলে আমার মনের মধ্যে শূন্যতা বিরাজ করে,তাই,,,,?
---থাক হইছে হইছে, আর পাম দিতে হবে না,সব ছেলেদের চেনা আছে।
---আমি সবার মত না।
---সবাই একই কথা বলে,আমি সবার মত না।আর হ্যা আপনাকে আর যাওয়া লাগবে না,সামনেই আমার বাসা,এতটুকু আমি একাই যাবো।
---জ্বী ঠিকআছে।
---আর শুনুন আগামিকাল থেকে ছোট ছাতা নিয়ে আসবেন।
---মানে?
---মানে বোঝা লাগবে না।যেটা বলছি সেটা করবেন।
সেই কথা বলেই অবন্তীর প্রস্থান ঘটলো।
পরদিন যে কথা সেই কাজ।
---- সাফিন ছোট ছাতা নিয়ে সকাল ৭ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত দাড়িয়ে ছিল। অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হল। অবন্তী নিচে নেমে আসলো।
বাইরে ঝিড়ি ঝিড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
অবন্তীর আগে থেকেই প্ল্যাণ ছিল বৃষ্টি থাকলে সোজা রবীন্দ্র সরোবরে চলে যাবে।
দু’জন মিলে রিকশাতে করে ছুটলো গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
যেতে যেতে অনেক কথা জানা হল।
অবন্তী শহরের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স চলমান।
অন্যদিকে সাফিন শিক্ষিত বেকার ।
অবন্তী সাফিনের এই ব্যাপার টা মেনে নিতে পারলো না।
বেকার মানুষ একদম সহ্য হয় না অবন্তীর।
তারপরেও সাফিনকে সে কিছুই বলল না।
বাইরে ঝিড়ি ঝিড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
অবন্তীর আগে থেকেই প্ল্যাণ ছিল বৃষ্টি থাকলে সোজা রবীন্দ্র সরোবরে চলে যাবে।
দু’জন মিলে রিকশাতে করে ছুটলো গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
যেতে যেতে অনেক কথা জানা হল।
অবন্তী শহরের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স চলমান।
অন্যদিকে সাফিন শিক্ষিত বেকার ।
অবন্তী সাফিনের এই ব্যাপার টা মেনে নিতে পারলো না।
বেকার মানুষ একদম সহ্য হয় না অবন্তীর।
তারপরেও সাফিনকে সে কিছুই বলল না।
চুপ করে ছিল অবন্তী।
ওরা যখন সরোবরে বসেলো, তখন ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিল।
চুপচাপ দুজন।
কেউ কিছু বলছে না। হঠাৎ বলে উঠলো: তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? আজীবন কি বেকারই থাকবে নাকি নিজের জন্য হলেও কিছু করবে?
: চেষ্টা চলমান, কিন্তু লাভ হচ্ছে না।
অবন্তী বুজতে পারলো। কিন্তু হতাশ হলেন না।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে চাকরীর বাজার আগুন।
অবন্তী জানে সাফিন তাকে কতটা ভালবাসে।
ভাল যদি নাই বাসতো তাহলে সবসময় তাকে ফলো করতো না।
অবন্তীও তাকে ভালবাসে, কিন্তু অবন্তী কখনো প্রকাশ করবে না।।
:সাফিন আমি রঙ চা খাবো।
: কোন টং দোকানে বসে খায়?
:না, আমি বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে চা খাব।
সাফিন আর না করতে পারলো না।।
পাশের টং দোকান থেকে ২ কাপ চা হাতে নিয়ে অবন্তীর কাছে গিয়ে এক কাপ চা বাড়িয়ে দিল অবন্তীর দিকে।
সাফিন সচারাচর চা খায় না; অবন্তী খাচ্ছে তাই সেও।
অবন্তী: চা তোমার ভাল লাগে?
: আমি চা তেমন একটা খায় না।
: আমাকে খুশি করানোর জন্য চা খাচ্ছো আমার সাথে?
: ঠিক তা না। অভ্যাস করছি, তোমার সাথে চা খাওয়ার।
: আর কি কি অভ্যাস করতে পারবে?
: অনেক কিছুই করতে পারব, তবে নিজেকে কোন প্রকার পরিবর্তন করতে পারব না। আমি সাফিন যেমন আছি তেমনই থাকব।
অবন্তী মুচকি হাসলো। এই ছেলের মধ্যে সুপ্ত কিছু লুকিয়ে আছে।
প্রায়ই দেখা যায় একটা মেয়ে যখন ছেলেকে বলে আমার জন্য হলেও তোমাকে পরিবর্তন হতে হবে, সে কিছু না ভেবেই হ্যা বলে দেয়। কিন্তু সাফিন সেটা করে নি।
অন্যান ছেলেদের চেয়ে সাফিন অনেকটা আলাদা।
চা শেষ হতে হতে বৃষ্টিও শেষ হলো।
ঘড়িতে সময় তখন বেলা ৩:০০ টা।
দুপুরের খাবার দুজন একসাথে খাবে। অবন্তী যখন সাফিনকে রেস্টুরেন্ট এর দিকে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন সাফিন যেতে চাচ্ছিলো না।
অবন্তী ঠিকই বুজতে পারলো তার পকেট ফাঁকা।
খাবারের বিল মেটানোর মত ক্ষমতা তার নেই।
কিন্তু অবন্তী এতটা অপদার্থ নয় যে সাফিনের উপর বিল চাপিয়ে দিবে।
সাফিনকে এক প্রকার জোড় করেই নিয়ে গেল।
খাবার পর্ব শেষ করে অবন্তী যখন বিল দিচ্ছিলো তখন সাফিন বলছিল আমি দেই, কিন্তু অবন্তী জানে তার কাছে গাড়ী ভাড়া ছাড়া এক্সট্রা কোন টাকা নেই।
এক ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিল সাফিন কে।
বাসায় ফেরার পথে সাফিনকে জিজ্ঞেস করলো: আমায় ভালবাসো?
: মাথা নাড়া দিয়ে হ্যা সম্মতি করল।
: মুখে কথা নেই তোমার? মাথা নাড়লে কিছু বুজা যায়?
: তারপর সে হ্যা বলল।
সাফিনের একই প্রশ্ন অবন্তীকে জিজ্ঞেস করার ইচ্ছে থাকলেও সে জিজ্ঞেস করলো না।
অবন্তীকে প্রচুর ভয় পাই সাফিন।
অবন্তী জানে তাকে জিজ্ঞেস করার মতো সাহস তার নেই।
এই জন্য অবন্তী নিজেই তাকে বলল:
আমিও তোমাকে ভালবাসি।
তবে ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে হলেও একটা কিছু কর।
পাওয়ার আগেই হারানোর ভয় কাজ করে।
অবন্তী এই কথা বলে চুপ হয়ে আছে।
সাফিন ভাবছে পাওয়ার আগেই হারিয়ে ফেলার।
দুই জন আকাশের দিকে ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছে।
শেষ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে কি?
হাজারো ভাবনা মনের মধ্যে নাড়া দিয়ে উঠছে।
Comments
Post a Comment